শিক্ষার্থীদের আটকের চেষ্টা, রুখে দাঁড়ালেন শিক্ষকরা
বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় :
০১-০৮-২০২৪ ০৩:৫৮:৩৩ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০১-০৮-২০২৪ ০৩:৫৮:৩৩ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি
ছাত্রহত্যার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক নেটওয়ার্কের ডাকা মৌন মিছিল থেকেও শিক্ষার্থীদের আটকের চেষ্টা করেছে পুলিশ। তবে এসময় রুখে দাঁড়ান সেখানে উপস্থিত শিক্ষকরা। তাদের পুলিশের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের ছাড়িয়ে নিতে দেখা গেছে। এসময় সাংবাদিকদের হেনস্তা করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাবির শহিদ জোহা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তারা মৌন মিছিলে সংহতি জানিয়ে অংশ নিতে আসেন। তাছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি পালনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেন। কিন্তু পুলিশ তাদের ওপর হামলা করে, টেনে হিঁচড়ে ২ জনকে আটক করে নিয়ে গেছে। এই বর্বরতার বিচার দাবি করেন তারা। তারা দেশব্যাপী ছাত্র হত্যার ঘটনার বিচারও দাবি করেছেন।
বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা 'রিমেমবারিং আওয়ার হিরোস' কর্মসূচি পালনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। তখন পুলিশ বাধা দিলে কেন্দ্রীয় মনজিদ সংলগ্ন প্রাচীর টপকে ক্যাম্পাসে ঢোকেন স্কুল-কলেজের প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী। পরে শহিদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের মৌন মিছিলে যোগ দেন তারা। মিছিল শেষে চলে যাওয়ার আগ-মুহূর্তে হঠাৎ ইউনিফর্ম ছাড়া কিছু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য শিক্ষার্থীদের টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন। তখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের বাধা দেন এবং ছাড়িয়ে আনেন। পরে তাদের নিরাপদে ক্যাম্পাস ত্যাগে সহায়তা করেন। এ সময় ক্যাম্পাসের সাংবাদিকদের ওপরও চড়াও হন পুলিশ। দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের বিভাগীয় প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন ও সমকাল পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি অর্পন ধরকে মারধর ও তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আমজাদ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থী আটকের লাইভ চলাকালে পুলিশ আমার উপর চড়াও হয় এবং মোবাইল কেড়ে নিয়ে কিল-ঘুষি মারেন এবং আইডি কার্ড ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।
অর্পণ ধর বলেন, আমার ঘাড় চেপে ধরে তুলে নেয়ার চেষ্টা করা হয়। সাংবাদিক কার্ড দেখিয়ে পরিচয় দিলে আমাকে গোপন সোর্স বলে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে সাদা পোশাকধারী একজন। পরে পুলিশ এসে রক্ষা করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানায় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
এ ব্যাপারে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সেলিম রেজা নিউটন বলেন, 'শিক্ষার্থীদের চ্যাং দোলা করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। কারা এরা! আমরা জবাব চাই। এটা কোন ফোর্স? এটা কি কোন বৈধ বাহিনী? এটা কোন বৈধ সরকারের আচরণ হতে পারে? দেশে তো সামরিক আইন জারি হয়নি। সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল, তারা এটা করতে নিষেধও করেছে। কিন্তু এই সাদা পোশাকধারী এরা কারা? দিন দুপুরে একটা ছেলেকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে! গণতান্ত্রিক এই দেশে শান্তিপূর্ণভাবে কথা বলার অধিকার তো আছে। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।'
মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন বলেন, 'দেশে একটা নির্মম হত্যাকাণ্ড হয়ে গেছে। এটার দায় সরকার ও সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর। এখনো যে তামাশা হচ্ছে, সেটাও অন্যায়। সরকার রাজনৈতিক কোন সমাধান করছে না। এগুলো চক্রান্ত বলে হাজার হাজার মানুষের মুখ বন্ধ করা যাবে না।'
নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে সহায়তা সেল গঠন করেছে রাবি প্রশাসন। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন নিরপরাধ শিক্ষার্থী যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেজন্য সহায়তা সেল গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী দুইজন সহকারী প্রক্টরকে নিয়োজিত রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরপরাধ কোন শিক্ষার্থী যাতে হেনস্তার শিকার না হয় সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাজ করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও এই আহ্বান জানানো হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin
কমেন্ট বক্স